খোঁড়া লোকটা লাঠিতে ভর দিয়ে কোনো রকমে এসে সরকারি হাসপাতালের আউটডোরের মেঝের ওপর লেপ্টা মেরে বসে পড়ে। সে বসেছে বড় একটা পিলারের সঙ্গে হেলান দিয়ে। লাঠিটা পাশে রেখে চিকিৎসকের ঘরের দরজায় দাঁড়ানো দারোয়ানের দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্কভাবে হাঁফাচ্ছে সে। তার চোখে মুখে সন্দেহের দোলা।
আমি কি পারব এ দারোয়ানকে অতিক্রম করে ডাক্তারের কাছে পৌঁছতে?
বহু দূর থেকে অনেক কষ্ট স্বীকার করে একটু ভালো চিকিতসার জন্য সে এসেছে বড় হাসপাতালে। লোক মুখে অবশ্য আগেই শুনেছে এসব হাসপাতালে চিকিতসা হয় না। দারোয়ান, দালাল পরিবেষ্টিত ডাক্তারগণ রোগীর পুরো কথা না শুনেই লিখে দেয় ওষুধের নাম। তবু সে লোকদের কথায় কান দেয় নি। তার ধারণা সরকারি হাসপাতাল মানেই এলাহী কাণ্ড, বড় বড় বিল্ডং, উচ্চ ডিগ্রিধারী ডাক্তার। নিন্দুকেরা যাই বলুক এসব হাসপাতালে চিকিতসা না পেলে দেশের গরীব মানুষগুলো বেঁচে আছে কীভাবে? একদিন তো একজন বলেই ফেলল, গরীব মানুষ যারা বাঁচার এমনিতেই বেঁচে আছে। যারা ভোগার ভুগছে। যারা মরার ধুকে ধুকে মরছে। ডাক্তারের কাছে তারা পৌঁছতেই পারে না। চিকিতসা বলতে যা তার পায়, হয় কুচিকিতসা না হয় অপচিকিতসা। তেল মালিশ, ঝারফুঁক, পানি পড়া এসব আর কি। হাঁটুতে টিউবারকলোসিস হয়ে ফোলে গেলে ওরা বলে গেঁটো বাত। দিয়ে দেয় ছালপাতা বাটা কিংবা তেল মালিশ। কিংবা ঝারফুঁকের পর কাইকামাছের ঠোঁট দিয়ে ছোবলিয়ে বের করে দেয় রক্ত। গরীব মানুষেরা তাদের কাছে যায় ঠেকে শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে।
কিন্তু খোঁড়া কদম আলী বরাবরই শক্ত, উন্নত মনের মানুষ। একটা পা খোঁড়া হলেও মনটা তার খোঁড়া নয়। হাসপাতালে আসার আগে আরও একজনের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। সে লোকটা মোটেই পঙ্গু নয়, গরীবও নয়। সে বলেছিল, যেতে চাইলে যাও মানা করব না। তবে পাত্তি নিয়ে যেও। ওসব জায়গায় টুল-টেবিল থেকে আয়া-রাঁধুনি পর্যন্ত পাত্তি চায়। তোমার থাকলে অবশ্যই নিয়ে যেও। সে আমল দেয় নি। তার একটাই বিশ্বাস সরকারি হাসপাতালগুলো চিকিতসা না করলে গরীব মানুষেরা বেঁচে আছে ক্যামনে? কিছুদিন আগের কথা তার মনে পড়ে। সে গিয়েছিল শহরের নামকরা একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিতসা করাতে। সেদিন কী অপমানটাই না হতে হয়েছে তাকে।
ক্লিনিকের গেটে মোটা মোচওয়ালা বিশালদেহী দারোয়ান বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। কদম আলী তার সামনে গিয়ে বা-হাতে লাঠি ধরে ডান হাতে উচিয়ে সালাম দেয়। দারোয়ান সালামের উত্তর না দিয়ে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তার দিকে তাকায়। যেন উৎকট কোনো ঝামেলা। আগেই বলে “যাইন যাইন; বিরক্ত কইরেন না। এই হানে ভিক্ষা টিক্ষা দেয়া অয় না।
কদম আলী আর যাই করুক ভিক্ষে করে না। সে বাড়িতে বসে পাকা বাঁশ দিয়ে মাছ ধরার বাইর বাঁধে; মোড়ো, কাগজের ঠোংগা তৈরি করে। আয় অল্প হলেও স্বামী-স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে সংসার চলে যায় তার। কিন্তু একদিন জঙ্গলে বাঁশ কাটতে গিয়ে খোঁড়া পায়ে আঘাত পায় সে। সে আঘাতই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। এরই চিকিতসা করাতে সেদিন ক্লিনিকে গিয়েছিল, আজও এসেছে। হাঁটুটা ফুলে ড্রাম হয়ে আছে। দারোয়ানের কথা শুনে তার বুকটা গর্বে ভরে ওঠে। সে অধিকতর নরম হয়ে বলে, “দারোয়ান ভাই, আপনে ভুল করতাছেন, আমি ভিক্ষুক না, ভিক্ষা চাইতে আই নাই, আইছি চিকিতসা করাইতে।”
চিকিতসা করাইতে এই ক্লিনিকে? জায়গা আর আপনে পাইলাইন না? আপনেরে তো মিয়া ঢুকতে দিলেই আমার চাকরি নট অইয়া যাইব।
তাই নাকি ভাই! সে চোখ কপালে তুলে।
হ। আপনে এক কাজ করেন সরকারি হাসপাতালে যান, পাঁচ টাকা দিয়া আউটডোরের একটা টিকিট কিইনা দেখাইয়া ফালান। আমার তো মনে অয়-তাতেই কাম অইয়া যাইব। অবশ্য আপনের কথা যদি দয়া কইরা ডাক্তার হুনে।
কদম আলী দরোয়ানের অতি কথকতার সুযোগ নিয়ে তার অন্তরের ঢোকার চেষ্টা করে। সে খুব নরম ব্যবহার করে। তার ধারণা দরোয়ান চেষ্টা করলে এই ক্লিনিকেই তার চিকিতসাটা হয়ে যেতে পারে। সে গেটের লোহার পাল্লা ধরে দাঁড়িয়ে বলে,
আপনে যদি দয়া কইরা ...।
কিছু কাম অইব না, দয়া দাক্ষিণ্যের জায়গা এইডা না, এইডা অইল ট্যাকার জায়গা...।
ট্যাকা তো আমিও আনছি, এই দেহেন। সে লুঙ্গির নিচের আন্ডারওয়্যারে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলে।
দেহেন আপনে কিন্তু আমারে বিরক্ত করতাছেন।
দারোয়ানের কথার ধরণ মুহূর্তে পাল্টে যায়। কদম আলী সামান্য পিছিয়ে এসে ঢোক গিলে। আমতা আমতা করে বলে, “ভাই গরীব মানুষ কি বিনা চিকিতসায় মরব?
মরব ক্যায়া সরকারি হাসপাতাল আচে না? ইয়া উচা বিল্ডিং আর বড় বড় ডাক্তার কেল্লাগি...? যাইন যাইন ওইখানে যাইন।
জি যাইতাছি।
তার ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আধুনিক মডেলের ঝকমকে একটা মাইক্রোবাস গেটে এসে থামে। থেমেই বার কয়েক হর্ন বাজায়। একজন মানুষের স্বাভাবিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে যতটুকু সময় লাগে দারোয়ান এর চেয়ে কম সময় নিয়ে ঘুরেছে, হাত বাড়িয়েছে লোহার গেট খুলে দিতে। কিন্তু এর আগেই বাসের জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে পেট মোটা একটা লোক রূঢ় কণ্ঠে বলে ওঠে, অপদার্থ দেরি করছিস কেন?
গালিটা শুনে দারোয়ানের মুখটা নিসুন্ধাতিতা হয়ে গেল। সে দুহাতে গেটটা এমনভাবে খুলল যেন দুটি পাল্লা ছিটকে দূরে গিয়ে পড়বে। কদম আলী সরে যাওয়ার সময় পেল না। বে-কুফের মতো দাঁড়িয়ে নবাগতদের দেখছিল। গাড়ির ভেতরে এক মহিলা তরফাচ্ছে।
আহা বেচারি হয়তো প্রসব বেদনার ছটফট করতাছে। কদম আলী মনে মনে বলে, বড় লোকদের কত সুবিধা, বউয়ের প্রসব ব্যথা ওঠার পরও হাসপাতালে ছুইটা আসতে পারে। আর আমার মতো লোকদের বউরা মইরা গেলেও ডাক্তারের কাছে যাইতে পারে না। এইতো তারই পয়লা বাচ্চাটা হওয়ার সময় দুদিন তার স্ত্রী ব্যথায় ছটফট করেছে। এরপর ফালান ডাক্তারের হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেয়ে আধমরা বাচ্চাটা তার স্ত্রী প্রসব করেছিল। তাকে তখন অনেকেই বলেছে, বউটাকে নিয়ে হাসপাতালে যা কদম, তুই কী পেয়েছিস, ঘরে রেখে মারবি নাকি? তবু সে যেতে পারেনি হাত বড় খালি ছিল। সে তো পয়লা বাচ্চাটার মুখে এক ফোঁটা মধুও তুলে দিতে পারে নি পয়সার অভাবে। আজ যদি বাচ্চাটা এদিক-সেদিক কিছু বলে বসে, তার মা তাকে খুটা দেয়। বলে, কইব না জন্মের পর তো মুখে একফোঁটা মধুও তুইলা দিতে পারেন নাই। সত্য কথাই বলে আমার বউটা। অতীত চিন্তার সমুদ্রে সে যখন ডুবে আছে তখনই ডাক পড়ে একজন রোগীর। চিন্তা স্রোত কেটে যায়।
কাছুম আলী..., কাছুম আলী আছেন...?
হ আছি। থরোবরো করে একজন আধবয়সী লোক পেট চেপে ধরে ছুটে যায়। দারোয়ানের সামনে দাঁড়ায় সে, দারায়ান বলে, এইহানে খাড়ন, যে গেছে বাইর অইয়া লউক। ইতোমধ্যেই দারোয়ান তার কানে কানে কী যেন বলল। লোকটা তখনই পকেটে হাত ঢুকিয়ে হে হে করে হাসে। ও এই কথা? পকেট থেকে হাত বের করে গোপনে দারোয়ানের হাতে যেন কী দেয় সে। দারোয়ান আর দেরি করে না। ভেতরে যাওয়ার পথ করে তার। এভাবেই একজনের পর একজন ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। এমনকি যারা কদম আলীর পরে এসেছে তারাও। সে শুধু উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখছে। এই বুঝি ডাক পড়ল তার। একবার ধৈর্য় হারায় সে। জিজ্ঞেস করে,
কী ভাই আমারডা যে আইয়ে না?
আরে আইব আইব, বহেন। যারা আগে আইছে তারা আগে যাইব না?
হেতো যাইবই। তো আমারেও একটু সুযোগ দিয়েইন। বহু দূর থাইকা আইছি।
এ পর্যন্ত তার একবারও ডাক পড়ে নি। ডাক পড়েছে এমন অনেকেই আবার দারোয়ানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাদেরও ঢুকতে দিচ্ছে না। একজন ঢোকার জন্য জোর করলে দারোয়ান বলল,
পাগল নাকি, দিলেই তো ছাইড়া দিই।
কী দিতাম? দিতে পারলে কি আর এই হাসপাতালে আইতাম?
লোকটা বেশি উচ্চবাচ্য শুরু করলে দারোয়ান তাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়। সামনে থাকে দুজন বৃদ্ধ মহিলা আর একজন হাবাগোবা ধরনের পুরুষ।
আমরারে যাইতে দিতাইন না ভাইজান...? এক মহিলা বিনীতভাবে জানতে চায়।
দিতাম না মানে-এইডা কি কন? তয় একটু দেরি অইব।
দেরী আইব ক্যায়া? আমার পরে যারে ডাকলেন সেও তো চইলা গেল। আমার কাছে ট্যাকা পয়সা নাই দয়া কইরা যাইতে দেন।
দারোয়ান এ মহিলাকে ছেড়ে দিলো। বাকি রইল দুজন। এক মহিলা এক পুরুষ আর কদম আলী নিজে। ইতোমধ্যে ওয়ার্ডের সামনে ভিড় কমে গেছে। শান্ত হয়ে এসেছে পরিবেশ। রিকশা বেবিটেক্সি এসব যানবাহনে করে নুতন যেসব সিরিয়াস রোগীরা আসছে তারা সামনের রাস্তা দিয়ে এমার্জেন্সির দিকে চলে যাচ্ছে। আউটডোরের এ কক্ষে আজ আর কোনো রোগি আসবে না। কাজেই আউটডোরের সামনে ছাদওয়ালা বারান্দায় রোগীদের জন্য রাখা বেঞ্চগুলো তখন ফাঁকা। ফাঁকা জায়গায় খুঁটির সঙ্গে হেলান দিয়ে একপাশে বসে আছে কদম আলী। তার ডাক তখনও পড়ে নি। কদম আলী নিজের জায়গায় বসেই আবার জিজ্ঞেস করে,
কী ভাইজান, আমারডা অহনো আইল না?
আইব ক্যামনে, আপনে তো জমিদারের লাহান সরকারি জায়গায় আরামে বইসা আছেন। মাল না ছাড়লে কাম অইব না।
মাল। মনে মনে শব্দটা আউরায় কদম আলী। গ্রামের একজন লোক আসার আগে তাকে বলেছিল, পাত্তির কথা। পাত্তি অহন অইছে মাল। বা কী সুন্দর নাম, না দিলে অয় না কাম! কদম পঙ্গু মানুষ। কথায় বলে, পঙ্গু, কানা, খোঁড়া এসব লোকের জিদ বেশি থাকে। চাপা জিদ।
মাল জিনিসটা কী বোঝলাম না দারোয়ান ভাই।
বুঝবেন, ডাক না পড়লেই বুঝবেন...। ইতোমধ্যে কাকুতি-মিনতি করে শেষ মহিলাটিও ভেতরে চলে গেল।
কদম আলীর চোখ জ্বলজ্বল করছে। ভাবে সে, মহিলা অওনের এই সুবিধা...।
হাবাগোবা লোকটার চোখে রাজ্যের অসহায়ত্ব। কিন্তু দারোয়ান তাকে কিছুতেই ঢুকতে দিচ্ছে না। তার আগে সে ইচ্ছে করেই যেন কদম আলীর নাম ডাকে।
কদম আলী, পিতা-অধম আলী, গ্রাম-ঢাকুয়া... আছেন নাকি...?
হ আছি, আমিই ভাইজান কদম আলী, অধম আলীর হতভাগা পুত্র। সে লাঠিতে ভর দিয়ে খোঁড়া পা-টা ছুঁড়ে মেরে এক ডাইভে একেবারে দারোয়ানের সামনে চলে আসে। কিন্তু হাবাগোবা লোকটার জন্য তখন তার মায়া লাগে, বলে,
দেন ভাইজান, এই লোকটারেই আগে যাইতে দেন। আমি পেছনে আছি, সবার পেছনেই থাকি।
অন্যের লাগি সুপারিশ করনের আগে নিজের কথা চিন্তা করেন। বয়স তো কম অইল না, কথাও তো কন সাইজ মতো, তো আমার ব্যাপরটা বুঝেন না ক্যায়া? মুখ ভেংচিয়ে বলে দারোয়ান।
চিন্তা যা করনের অতক্ষণ বইয়া বইয়া করছি। গরীব মাইসের চিন্তার শেষ নাই। যেইখানে রাইত সেইখানে কাইত। কি কন ভাই হাছা কইলাম না? সে হাবাগোবা লোকটাকে সাক্ষী মানে। কিন্তু হাবাগোবা লোকটা তার কথার কী উত্তর দেবে বুঝতে পারে না। বলে,
না আপনেই আগে যাইন, আপনের তো খাড়ইয়া থাকতে কষ্ট অইব।
কদম আলী ঢুকতে উদ্যত হয়। দারোয়ান কদম আলীর সামনে হাত পাতে। কদম আলী এবার রেগে যায়। পয়সা না দেয়ার জিদ আরও কঠোর হয় তার ভেতরে। বলে,
যতই হাত পাতেন ট্যাকা আমি আপনেরে দিতাম না। এই আমি ঢুকলাম পারেন তো ফিরান।
দারোয়ানের সঙ্গে জোর খাটানোর চিন্তা তার মাথায়। মনে মনে সে চিন্তা করছে, দারোয়ানের ঘুষ নেয়ার ব্যাপারটা ভেতরে ঢুকেই সে ডাক্তারকে বলবে। কিন্তু কাক চতুর দারোয়ান কোনো রকমে তাকে থামাল।
আরে ভাই থামেন, থামেন। আগে এরে ঢুকতে দেন।
সে হাবাগোবা লোকটাকে টেনে হেঁচরে ভেতের ঢুকিয়ে ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়।
এরপর আবার কদম আলীর অপেক্ষার পালা। অনেকক্ষণ পর দারোয়ান দুয়ার খুলে দেয়। কদম আলী দ্রুত পা চালিয়ে ভেতরে ঢুকে এগিয়ে যায় ডাক্তারের রুমের দিকে। পর্দা টেনে দুয়ারে দাঁড়ায়। কিন্তু কোথায় ডাক্তার? রুম শূন্য...। তার কণ্ঠে এবার গভীর হতাশার সুর, দারোয়ান ভাই ডাক্তার...?
দারোয়ান অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে হেসে স্বগতভাবে বলে, হালা খোঁড়া, অহন তো ভালা নরম অইছছ...।
সে কদম আলীর দিকে ফিরে বলে,
আমি কইছলাম, স্যার আরেকজন আছে। স্যারে বলল, কাইল আইতে কইয়ো।
কাইল...?
হ আপনে কাইল আইসেন। তয় কিছু লইয়া আইসেন। আগে ঢুকাইয়া দিমুনে...।
কদম আলী লাঠিটা উঁচিয়ে ধরে। দারোয়ানের মাথায় একটা বাড়ি বসিয়ে দিতে উদ্ধত হয়। কিন্তু পারে না। কিছুক্ষণ লাঠিটা ধরে রেখে নিজেই থেমে যায়। এমন কাজ সে জীবনেও করে নি।
ফেরার উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। সামনে হাসপাতালের আউটডোরের দীর্ঘ বারান্দা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে সে। এবার অসুস্থ পাটাকে তার আগের চেয়ে অনেক বেশি ভারী মনে হচ্ছে।